ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ায় রাজশাহী ও রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দমিছিল

- আপডেট সময় : ১২:৪০:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪
- / 101
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করায় রংপুর ও রাজশাহীতে আনন্দমিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার রাতে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার খবর পাওয়ার পর বেগম রোকেয়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দমিছিল করা হয়।
গতকাল রাত ১২টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে আনন্দমিছিলটি শুরু হয়। শহীদ আবু সাঈদ চত্বর (পার্কের মোড়) থেকে শুরু হয়ে চকবাজার এলাকা ঘুরে আবার প্রধান ফটকের সামনে এসে মিছিলটি শেষ হয়। এতে কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান তুলে আনন্দ প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ তাঁরা জানান। কারণ, ছাত্রলীগ সারা বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা হত্যাকাণ্ড, গুম, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নির্যাতন, টেন্ডারবাজি এবং অন্যান্য অপরাধে জড়িত ছিল। আওয়ামী লীগের সব সহযোগী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আনন্দমিছিলের পাশাপাশি মিষ্টি বিতরণ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরে মিলিত হন। পরে মিছিলটি বিভিন্ন আবাসিক হল প্রদক্ষিণ শেষে সাড়ে ১১টায় একই স্থানে এসে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
আনন্দমিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হইহই রইরই, ছাত্রলীগ গেলি কই’, ‘গণহত্যার সঙ্গী, ছাত্রলীগ জঙ্গি’, ‘ছাত্রলীগ দেখে যা, ক্যাম্পাসে তোর বাপেরা’, ‘ছাত্রলীগের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘ছাত্রলীগ ছাত্রলীগ, জঙ্গি জঙ্গি’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, শুধু ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করলেই হবে না, ছাত্রলীগের পৃষ্ঠপোষক আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের অন্তর্ভুক্ত সব দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগের মতো কোনো ফ্যাসিবাদী সংগঠন যেন গড়ে না উঠতে পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
একাত্তর–পরবর্তী সব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড একদিকে আর ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড অন্যদিকে রাখলে দেখা যাবে, তারা কয়েক গুণ বেশি অপরাধ করেছে। ফ্যাসিবাদের অন্যতম হাতিয়ার ছিল ছাত্রলীগ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার পৃষ্ঠপোষক ও মানবাধিকার কর্মী রাশেদ রাজন
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, ছাত্রলীগের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম ছিল ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। গত ১৫ বছরে তারা যেসব অপকর্ম করেছে, সেগুলো উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন পাস হয়েছে। বাকি চার দফা দাবিও দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাবি শাখার পৃষ্ঠপোষক ও মানবাধিকারকর্মী রাশেদ রাজন বলেন, একাত্তর–পরবর্তী সব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড একদিকে আর ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড অন্যদিকে রাখলে দেখা যাবে, তারা কয়েক গুণ বেশি অপরাধ করেছে। ফ্যাসিবাদের অন্যতম হাতিয়ার ছিল ছাত্রলীগ। গণভবন থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রতিটি ইঞ্চি মাটি দখল করে তারা অপরাধ কার্যক্রম চালিয়েছে। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি দেশের গণমানুষের দাবি ছিল।