ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সেতু থেকে মাঝনদীতে যেভাবে পড়ে গেল জিপ গাড়িটি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 128
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর রেলিং (নিরাপত্তাবেষ্টনী) ভেঙে মধ্যরাতে চাঁদের গাড়ি নামে পরিচিত জিপ গাড়ি কর্ণফুলী নদীতে পড়ে গেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় এ ঘটনা ঘটে। গাড়িতে থাকা দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। তবে গাড়িটি নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় আজ রোববার সকাল নয়টা পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সংস্কারকাজ চলমান থাকায় কালুরঘাট সেতুতে এখন পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। সংস্কারকাজের জন্য যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধু রেল চলাচল করতে পারে। আর গাড়ি চলাচল করে ফেরি দিয়ে। কিন্তু শনিবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা চাঁদের গাড়ি সেতুতে উঠে যায়। গাড়ির গতিও ছিল বেশি।

নদীতে পড়ে যাওয়া দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি হলেন গাড়ি চালক মো. আলমগীর। অন্যজন গাড়ির সহকারী। তাঁর নাম জানা যায়নি। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটি খালি ছিল।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান  বলেন, বোয়ালখালী থেকে একটি চাঁদের গাড়ি চট্টগ্রাম নগরের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি সম্ভবত বোয়ালখালীতে কোনো পণ্য নিয়ে এসেছিল। পণ্য খালাস করে ফিরে যাচ্ছিল। রাতের বেলা সেতু ফাঁকা দেখে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিং ভেঙে মাঝনদীতে পড়ে যায়। ওই সময় ওখানে থাকা লোকজন গাড়িতে থাকা দুই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করেন। আর নদীর স্রোত বেশি থাকায় গাড়ি উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

৯৩ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে শুরু থেকেই ট্রেন চলত। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় গত বছরের ১ আগস্ট থেকে বড় ধরনের সংস্কারকাজ শুরু করে রেলওয়ে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই সংস্কারকাজ করছে। পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল বিশেষজ্ঞ। সেতুর সংস্কারকাজ শুরুর পর ট্রেন ও গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আর বিকল্প হিসেবে ফেরি দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। বর্তমানে সেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে।

নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কীভাবে সেতুতে গাড়িটি উঠেছে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান  বলেন, তাঁদের সংস্কারকাজ প্রায় শেষ হয়েছে। তবুও গাড়ি চলাচলে এখনো কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেননা তাঁরা এখনো সেতুটি রেলওয়েকে হস্তান্তর করেনি। সেতুতে যাতে গাড়ি চলাচল করতে না পারে, সে জন্য নিরাপত্তারক্ষীরা কাজ করেন। এরপরও মানুষ জোর করে গাড়ি নিয়ে উঠে যায়। গতকাল শনিবার রাতেও এ ঘটনা ঘটেছে। তখন নিরাপত্তারক্ষীও কম থাকেন। আর চালক অনেক বেশি গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে নিচে নদীতে পড়ে গেছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন সংস্কারকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই সেতুতে গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

সেতু থেকে মাঝনদীতে যেভাবে পড়ে গেল জিপ গাড়িটি

আপডেট সময় : ১১:৫৭:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর রেলিং (নিরাপত্তাবেষ্টনী) ভেঙে মধ্যরাতে চাঁদের গাড়ি নামে পরিচিত জিপ গাড়ি কর্ণফুলী নদীতে পড়ে গেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটায় এ ঘটনা ঘটে। গাড়িতে থাকা দুজনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে। তবে গাড়িটি নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় আজ রোববার সকাল নয়টা পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

সংস্কারকাজ চলমান থাকায় কালুরঘাট সেতুতে এখন পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। সংস্কারকাজের জন্য যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধু রেল চলাচল করতে পারে। আর গাড়ি চলাচল করে ফেরি দিয়ে। কিন্তু শনিবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা চাঁদের গাড়ি সেতুতে উঠে যায়। গাড়ির গতিও ছিল বেশি।

নদীতে পড়ে যাওয়া দুজনের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি হলেন গাড়ি চালক মো. আলমগীর। অন্যজন গাড়ির সহকারী। তাঁর নাম জানা যায়নি। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটি খালি ছিল।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান  বলেন, বোয়ালখালী থেকে একটি চাঁদের গাড়ি চট্টগ্রাম নগরের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটি সম্ভবত বোয়ালখালীতে কোনো পণ্য নিয়ে এসেছিল। পণ্য খালাস করে ফিরে যাচ্ছিল। রাতের বেলা সেতু ফাঁকা দেখে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন চালক। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেতুর রেলিং ভেঙে মাঝনদীতে পড়ে যায়। ওই সময় ওখানে থাকা লোকজন গাড়িতে থাকা দুই ব্যক্তিকে তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার করেন। আর নদীর স্রোত বেশি থাকায় গাড়ি উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।

৯৩ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে শুরু থেকেই ট্রেন চলত। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় গত বছরের ১ আগস্ট থেকে বড় ধরনের সংস্কারকাজ শুরু করে রেলওয়ে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এই সংস্কারকাজ করছে। পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একদল বিশেষজ্ঞ। সেতুর সংস্কারকাজ শুরুর পর ট্রেন ও গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আর বিকল্প হিসেবে ফেরি দিয়ে যান চলাচলের ব্যবস্থা করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। বর্তমানে সেতুর কাজ শেষ পর্যায়ে।

নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কীভাবে সেতুতে গাড়িটি উঠেছে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. মেহেদী হাসান  বলেন, তাঁদের সংস্কারকাজ প্রায় শেষ হয়েছে। তবুও গাড়ি চলাচলে এখনো কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেননা তাঁরা এখনো সেতুটি রেলওয়েকে হস্তান্তর করেনি। সেতুতে যাতে গাড়ি চলাচল করতে না পারে, সে জন্য নিরাপত্তারক্ষীরা কাজ করেন। এরপরও মানুষ জোর করে গাড়ি নিয়ে উঠে যায়। গতকাল শনিবার রাতেও এ ঘটনা ঘটেছে। তখন নিরাপত্তারক্ষীও কম থাকেন। আর চালক অনেক বেশি গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে নিচে নদীতে পড়ে গেছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন সংস্কারকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনোভাবেই সেতুতে গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হবে না।