ঢাকা ০২:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিশ্বব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চেয়েছে সরকার

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • / 158
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মাথায় বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চেয়েছে। গত সপ্তাহে নতুন করে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়ে বিশ্বব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ মূলত জ্বালানি খাতে খরচ করা হবে। দুই কিস্তিতে ৫০ কোটি ডলার করে এই অর্থ চেয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

ইআরডির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের একটি দল সংস্থাটির যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের প্রধান কার্যালয় থেকে ঢাকা আসছে। অবশ্য দলটি অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে বলা হয়, আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের একটি মিশন সম্ভাব্য বাজেট-সহায়তাসহ সংস্কারের অগ্রাধিকারগুলো ঠিক করার আলোচনা শুরু করবে।

জানা গেছে, সরকার ১০০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চাইলেও কী পরিমাণ পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করবে দর-কষাকষির ওপর। এ ধরনের দর-কষাকষিতে নানা শর্ত থাকে। এসব শর্ত পূরণ করলেই অর্থ মেলে। মোটাদাগে, বহুজাতিক সংস্থাগুলোর শর্ত প্রায় একই রকম। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো রাজস্ব–ব্যাংক খাতসহ আর্থিক খাত সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইনি সংস্কার, ভর্তুকি কমানো, করছাড় হ্রাসসহ বিভিন্ন খাতে বড় ধরনের সংস্কার করা।

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার ৫০ কোটি ডলারের আরেকটি বাজেট সহায়তা চেয়ে বিশ্বব্যাংককে প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই বাজেট সহায়তা নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এলাকায় কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ কোটি ডলার নিয়ে দর-কষাকষি চলছে। এডিবির কাছ থেকে এই বাজেট সহায়তা পেলে অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) কাছ থেকে ২০ কোটি এবং কোরিয়া থেকে ১০ কোটি ডলার মিলবে।

দেশে দুই বছর ধরে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর চাপ আছে। রিজার্ভ কমছে। এ জন্য সরকার বাজেট সহায়তা পেতে আগ্রহী। এক-দেড় বছর ধরে ডলার প্রাপ্তির প্রধান উৎস রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয় ও প্রকল্পের বিদেশি ঋণের পাশাপাশি বাজেট সহায়তা পাওয়ার জন্য বেশি মনোযোগী অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ক্ষয়িষ্ণু রিজার্ভকে শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নেওয়া হয়। তবু এক বছরে রিজার্ভ কমেছে এক হাজার কোটি ডলার।

গত ৫ বছরে এডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ৮০০ কোটি ডলারের বেশি বাজেট সহায়তা পাওয়া গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ১৭৫ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা এসেছে। তবে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা এসেছে ২০২১-২২ অর্থবছরে। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০০ কোটি ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০৯ কোটি ডলার ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে মিলেছে ১৭৭ কোটি ডলার।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বিশ্বব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চেয়েছে সরকার

আপডেট সময় : ১১:১০:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মাথায় বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চেয়েছে। গত সপ্তাহে নতুন করে প্রায় ১০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়ে বিশ্বব্যাংককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই অর্থ মূলত জ্বালানি খাতে খরচ করা হবে। দুই কিস্তিতে ৫০ কোটি ডলার করে এই অর্থ চেয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।

ইআরডির একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের একটি দল সংস্থাটির যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের প্রধান কার্যালয় থেকে ঢাকা আসছে। অবশ্য দলটি অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে বলা হয়, আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের একটি মিশন সম্ভাব্য বাজেট-সহায়তাসহ সংস্কারের অগ্রাধিকারগুলো ঠিক করার আলোচনা শুরু করবে।

জানা গেছে, সরকার ১০০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা চাইলেও কী পরিমাণ পাওয়া যাবে, তা নির্ভর করবে দর-কষাকষির ওপর। এ ধরনের দর-কষাকষিতে নানা শর্ত থাকে। এসব শর্ত পূরণ করলেই অর্থ মেলে। মোটাদাগে, বহুজাতিক সংস্থাগুলোর শর্ত প্রায় একই রকম। এর মধ্যে অন্যতম শর্ত হলো রাজস্ব–ব্যাংক খাতসহ আর্থিক খাত সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইনি সংস্কার, ভর্তুকি কমানো, করছাড় হ্রাসসহ বিভিন্ন খাতে বড় ধরনের সংস্কার করা।

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার ৫০ কোটি ডলারের আরেকটি বাজেট সহায়তা চেয়ে বিশ্বব্যাংককে প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই বাজেট সহায়তা নিয়েও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

এদিকে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এলাকায় কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ কোটি ডলার নিয়ে দর-কষাকষি চলছে। এডিবির কাছ থেকে এই বাজেট সহায়তা পেলে অনেকটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংকের (এআইআইবি) কাছ থেকে ২০ কোটি এবং কোরিয়া থেকে ১০ কোটি ডলার মিলবে।

দেশে দুই বছর ধরে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভের ওপর চাপ আছে। রিজার্ভ কমছে। এ জন্য সরকার বাজেট সহায়তা পেতে আগ্রহী। এক-দেড় বছর ধরে ডলার প্রাপ্তির প্রধান উৎস রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয় ও প্রকল্পের বিদেশি ঋণের পাশাপাশি বাজেট সহায়তা পাওয়ার জন্য বেশি মনোযোগী অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া ক্ষয়িষ্ণু রিজার্ভকে শক্তিশালী করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ নেওয়া হয়। তবু এক বছরে রিজার্ভ কমেছে এক হাজার কোটি ডলার।

গত ৫ বছরে এডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ৮০০ কোটি ডলারের বেশি বাজেট সহায়তা পাওয়া গেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের হালনাগাদ হিসাব অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট ১৭৫ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা এসেছে। তবে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তা এসেছে ২০২১-২২ অর্থবছরে। এ ছাড়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০০ কোটি ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০৯ কোটি ডলার ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে মিলেছে ১৭৭ কোটি ডলার।