ঢাকা ০১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আহতদের বিদেশে পাঠাতে দূতাবাসের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ১১:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 62
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোর কাছে সহযোগিতা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের তৃতীয় সভায় প্রধান উপদেষ্টা এ পরামর্শ দেন। তাঁর সভাপতিত্বে সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম প্রমুখ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গুরুতর আহত যাঁরা, তাঁদের বিস্তারিত মেডিকেল হিস্ট্রির রিপোর্ট তৈরি করে দূতাবাসগুলোর কাছে সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন দূতাবাসের অনেক কর্মকর্তা জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছিলেন। আহতদের ব্যাপারে তাঁদের সহানুভূতি আছে। নিশ্চয়ই তাঁরা আমাদের এ ব্যাপারে সাহায্য করবেন।’

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ সভায় ফাউন্ডেশনের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুমোদন, নির্বাহী পরিষদ গঠন ও আয়-ব্যয়ের হিসাবও অনুমোদন দেওয়া হয়।

নির্বাহী পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. সারজিস আলম, অর্থ সম্পাদক হিসেবে মোহা. আহসান হাবীব চৌধুরী এবং নির্বাহী সদস্য হিসেবে মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম, সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি ও তাসনিম জারাকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

পাশাপাশি ছয় সদস্যের গভর্নিং বডি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, কাজী ওয়াকার আহমাদ, নূরজাহান বেগম, শারমীন এস মুরশিদ, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীনকে প্রধান করে একটি লিগ্যাল সাপোর্ট টিম গঠন করা হয়েছে।

সভায় জানানো হয়, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১০৭ কোটি ৭৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬৫ জন শহীদ পরিবারকে ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং ৭৭৫ জন আহত ব্যক্তিকে ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।

ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জালাল উদ্দীনকে চেয়ারম্যান করে মেডিকেল সাপোর্ট টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে করণীয়–সংক্রান্ত একটি বিশেষ প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

জালাল উদ্দীন জানান, এখন পর্যন্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে আর তিনজনকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই আরও দুজন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন। এ ছাড়া সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তুরস্কে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান বলেও জানান তিনি।

সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি, শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ, শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা জামানসহ শহীদ পরিবারের ১৪ জন সদস্য অংশ নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আহতদের বিদেশে পাঠাতে দূতাবাসের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ প্রধান উপদেষ্টার

আপডেট সময় : ১১:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে দূতাবাসগুলোর কাছে সহযোগিতা চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের তৃতীয় সভায় প্রধান উপদেষ্টা এ পরামর্শ দেন। তাঁর সভাপতিত্বে সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ ও সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম প্রমুখ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গুরুতর আহত যাঁরা, তাঁদের বিস্তারিত মেডিকেল হিস্ট্রির রিপোর্ট তৈরি করে দূতাবাসগুলোর কাছে সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। বিভিন্ন দূতাবাসের অনেক কর্মকর্তা জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছিলেন। আহতদের ব্যাপারে তাঁদের সহানুভূতি আছে। নিশ্চয়ই তাঁরা আমাদের এ ব্যাপারে সাহায্য করবেন।’

প্রায় আড়াই ঘণ্টাব্যাপী এ সভায় ফাউন্ডেশনের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুমোদন, নির্বাহী পরিষদ গঠন ও আয়-ব্যয়ের হিসাবও অনুমোদন দেওয়া হয়।

নির্বাহী পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. সারজিস আলম, অর্থ সম্পাদক হিসেবে মোহা. আহসান হাবীব চৌধুরী এবং নির্বাহী সদস্য হিসেবে মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম, সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি ও তাসনিম জারাকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।

পাশাপাশি ছয় সদস্যের গভর্নিং বডি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস, কাজী ওয়াকার আহমাদ, নূরজাহান বেগম, শারমীন এস মুরশিদ, নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে সদস্য হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুহা. মুজাহিদুল ইসলাম শাহীনকে প্রধান করে একটি লিগ্যাল সাপোর্ট টিম গঠন করা হয়েছে।

সভায় জানানো হয়, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ১০৭ কোটি ৭৫ লাখ ৬১ হাজার টাকা জমা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬৫ জন শহীদ পরিবারকে ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং ৭৭৫ জন আহত ব্যক্তিকে ৭ কোটি ৮৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়।

ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জালাল উদ্দীনকে চেয়ারম্যান করে মেডিকেল সাপোর্ট টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে করণীয়–সংক্রান্ত একটি বিশেষ প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন।

জালাল উদ্দীন জানান, এখন পর্যন্ত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে আর তিনজনকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই আরও দুজন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন। এ ছাড়া সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তুরস্কে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান বলেও জানান তিনি।

সভায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মাহমুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ সেবন্তি, শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া, শহীদ আনাসের বাবা সাহরিয়ার খান পলাশ, শহীদ তাহির জামান প্রিয়র মা শামসী আরা জামানসহ শহীদ পরিবারের ১৪ জন সদস্য অংশ নেন।