ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

অপরাধ দৃষ্টি নিউজ
  • আপডেট সময় : ১১:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • / 68
অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বুধবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। সন্ধ্যায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা’ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’।

সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার–পরবর্তী বিচারের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতীয় রাজনৈতিক নেতাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, কোনো দেশ কোনো দূতাবাসে হামলা করতে পারে না উল্লেখ করে সমাবেশে প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম সংগঠক আবু হানিফ বলেন, ‘সহকারী হাইকমিশনে ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুরা হামলা করেছে। অথচ যুদ্ধ চলাকালেও দূতাবাসে হামলা করা হয় না। কিন্তু স্থিতিশীল অবস্থায় ভারতে যেভাবে হাইকমিশনে হামলা হয়েছে, তা আমরা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হুমকি হিসেবে দেখি।’

আবু হানিফ বলেন, বাংলাদেশ এখন আর শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নেই। এটা ১৮ কোটি জনগণের বাংলাদেশ। এখানে সরকারকে ক্ষমতায় ভারত বসায়নি, জনগণ বসিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের গোলামির সম্পর্ক এখন আশা করা উচিত হবে না। জুলাই অভ্যুত্থানের বাংলাদেশে লুটপাট দুর্নীতি চলবে না।

সমাবেশে প্ল্যাটফর্মের আরেক সংগঠক রুবেল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এখন ক্ষমতায় তরুণেরা। এখন আর গোলামি চলবে না। নামমাত্র আটক করলেই হবে না। হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। হাইকমিশনে হামলার সঠিক বিচার না হলে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করা হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ছবি:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে রক্তের বিনিময়ে সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি আমরা। কিন্তু তখন থেকে ভারত বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছিল। ’২৪-এর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে সেটা কবর দিয়েছি। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে তাঁকে পুনর্বাসন করতে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানান এবং হাইকমিশনে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

 স্মারকলিপি দেবে ইনকিলাব মঞ্চ

 এর আগে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের অভিমুখে প্রতিবাদ র‍্যালি নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি তারা ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সংবাদ সম্মেলনে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, আজমির শরিফ দখলের ষড়যন্ত্র ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়।

কর্মসূচি ঘোষণা করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি বলেন, ‘বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে আমরা শুক্রবার সাড়ে তিনটায় গুলশান ২ সার্কেলে সমবেত হব। পরে সেখান থেকে শান্তিপূর্ণ র‍্যালি নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেব।’

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল জাবির বলেন, ‘ভারত তার সংখ্যালঘুদের উলঙ্গ করে রাস্তায় ঘুরায়, গরুর মাংস খাওয়ার অপরাধে মুসলমানদের পিটিয়ে মারে, মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণ করে, আর আমাদের তারা সম্প্রীতি শেখায়। আমরা বলে দিতে চাই, আমরা এখন থেকে ভারতের কাছ থেকে শিখব না, ভারতকে শিক্ষা দেব।’

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত

আপডেট সময় : ১১:২১:০৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বুধবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। সন্ধ্যায় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা’ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগে বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে ‘ইনকিলাব মঞ্চ’।

সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার–পরবর্তী বিচারের দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতীয় রাজনৈতিক নেতাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, কোনো দেশ কোনো দূতাবাসে হামলা করতে পারে না উল্লেখ করে সমাবেশে প্ল্যাটফর্মটির অন্যতম সংগঠক আবু হানিফ বলেন, ‘সহকারী হাইকমিশনে ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুরা হামলা করেছে। অথচ যুদ্ধ চলাকালেও দূতাবাসে হামলা করা হয় না। কিন্তু স্থিতিশীল অবস্থায় ভারতে যেভাবে হাইকমিশনে হামলা হয়েছে, তা আমরা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হুমকি হিসেবে দেখি।’

আবু হানিফ বলেন, বাংলাদেশ এখন আর শেখ হাসিনার বাংলাদেশ নেই। এটা ১৮ কোটি জনগণের বাংলাদেশ। এখানে সরকারকে ক্ষমতায় ভারত বসায়নি, জনগণ বসিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগের গোলামির সম্পর্ক এখন আশা করা উচিত হবে না। জুলাই অভ্যুত্থানের বাংলাদেশে লুটপাট দুর্নীতি চলবে না।

সমাবেশে প্ল্যাটফর্মের আরেক সংগঠক রুবেল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে এখন ক্ষমতায় তরুণেরা। এখন আর গোলামি চলবে না। নামমাত্র আটক করলেই হবে না। হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। হাইকমিশনে হামলার সঠিক বিচার না হলে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও করা হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪
ইনকিলাব মঞ্চের সংবাদ সম্মেলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ছবি:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৭১ সালে রক্তের বিনিময়ে সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করেছি আমরা। কিন্তু তখন থেকে ভারত বাংলাদেশকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছিল। ’২৪-এর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে সেটা কবর দিয়েছি। কিন্তু শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়ে তাঁকে পুনর্বাসন করতে একের পর এক ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেব না।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার আহ্বান জানান এবং হাইকমিশনে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

 স্মারকলিপি দেবে ইনকিলাব মঞ্চ

 এর আগে বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে সংবাদ সম্মেলনে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাসের অভিমুখে প্রতিবাদ র‍্যালি নিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। পাশাপাশি তারা ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সংবাদ সম্মেলনে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, আজমির শরিফ দখলের ষড়যন্ত্র ও সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়।

কর্মসূচি ঘোষণা করে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি বলেন, ‘বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনে আমরা শুক্রবার সাড়ে তিনটায় গুলশান ২ সার্কেলে সমবেত হব। পরে সেখান থেকে শান্তিপূর্ণ র‍্যালি নিয়ে ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেব।’

সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল জাবির বলেন, ‘ভারত তার সংখ্যালঘুদের উলঙ্গ করে রাস্তায় ঘুরায়, গরুর মাংস খাওয়ার অপরাধে মুসলমানদের পিটিয়ে মারে, মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণ করে, আর আমাদের তারা সম্প্রীতি শেখায়। আমরা বলে দিতে চাই, আমরা এখন থেকে ভারতের কাছ থেকে শিখব না, ভারতকে শিক্ষা দেব।’