প্রশ্নপত্র ফাঁসে গ্রেপ্তার ১৭: তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি পিএসসির

- আপডেট সময় : ১২:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪
- / 133
প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)। গতকাল সোমবার রাতে এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পিএসসির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্মসচিব আব্দুল আলীম খানকে। কমিটির সদস্য পিএসসির পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানা। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে পিএসসির পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হককে।
সোহরাব হোসাইন বলেন, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হবে, সঙ্গে সঙ্গেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে তদন্ত কমিটি, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। তদন্ত কমিটিতে আছেন পিএসসির তিনজন সদস্য। তাঁরা বিষয়টি দেখবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) দুজন উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সিআইডি জানিয়েছে, পিএসসির উপপরিচালক মো. আবু জাফর ও জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক মো. আলমগীর কবির, কর্মচারী (ডেসপাস রাইডার) মো. খলিলুর রহমান ও অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম এবং সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী ও তাঁর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান, সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও মিরপুরের ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসে কর্মরত মো. মামুনুর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী মো. শাহাদত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান, ব্যবসায়ী সহোদর মো. সাখাওয়াত হোসেন ও সাইম হোসেন, ব্যবসায়ী মো. জাহিদুল ইসলাম এবং যুবক লিটন সরকার গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের (সিপিসি) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. তৌহিদুল ইসলাম সোমবার সন্ধ্যায় বলেন, গত দুই দিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই ১৭ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত ছিলেন। তাঁরা একাধিক নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসেও জড়িত বলে জানা গেছে। তাঁদের সিআইডি কার্যালয়ে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোর গত রোববার পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে পিএসসির কর্মকর্তারা প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সিআইডি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, পিএসসির কোনো নিয়োগ পরীক্ষা এলেই এই চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র ফাঁস করে অর্থ নিতেন। ৫ জুলাই (শুক্রবার) অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন তাঁরা। চক্রের সদস্যরা ওই পরীক্ষার আগের রাতে তাঁদের চুক্তি করা শিক্ষার্থীদের অজ্ঞাতনামা স্থানে রেখে ওই প্রশ্নপত্র ও এর উত্তর দিয়ে দেন।
পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নটি উপপরিচালক মো. আবু জাফরের কাছ থেকে তিনি নিয়েছিলেন। এর জন্য আবু জাফরকে তিনি ২ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এর আগেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কক্ষের ট্রাংক খুলে তিনি প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে সেগুলো ফাঁস করেছেন। সেগুলোর মধ্যে বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও রয়েছে। এ কাজে পিএসসির সাবেক গাড়িচালক আবেদ আলী বিভিন্ন সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
পিএসসির চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন গতকাল সোমবার বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করা হবে।